দৈনিক সংবাদ অনলাইনঃ একেবারে রাজযোটক! অনেকে বলছেন, একেবারে হাঁড়ি অনুযায়ী সরা। বর-কনের এমন জুড়ি ভূ-ভারতে খুব বেশি দেখা যায় না। দেখা গেল বিহারের ভাগলপুরে। ৩৬ ইঞ্চির বরের সঙ্গে হিন্দু প্রথা মেনে চার হাত এক হল ৩৪ ইঞ্চি কনের। এমন আশ্চর্য যুগলের বিয়ে দেখতে বিন আমন্ত্রণেও কৌতূহলী মানুষের ভীড়ে উপচে পড়ল বিয়ের মন্ডপ। যেন মন্দিরে ঠাকুর দর্শন, কনেকে নিয়ে বরের সাত পাক ঘোরা শেষ হতে দর্শকদের মধ্যে থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এল ফুলের পাপড়ি।
অনেকে বলেন জুটি তৈরি করেন ঈশ্বর। মর্ত্যে এসে তাদের মিলন হয়। এই বিয়ের পর উপস্থিত অধিকাংশ অনাহূত অতিথির মুখে এ কথাই শোনা গেল। বিনা আমন্ত্রণে অন্তত এক হাজার মানুষ এই বিয়ের সাক্ষী থেকেছেন। বর-কনের সঙ্গে উৎসাহী লোকজন দেদার সেলফিও তুলেছেন। সকলেই বামন দম্পতির সুখ-শান্তি কামনা করেছেন। অতি-উৎসাহী মানুষের ভীড় একসময়ব এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে, পুলিশ ডাকার ভাবনা আসে কারও কারও মনে।
কনের বয়স ২৪ বছর। নাম মমতা কুমারি। সাকিন ভাগলপুরের নবগাছিয়া এলাকার অভিয়াবাজার। সেখানকার কিশোরীলাল ওরফে গুজো মন্ডলের কন্যা তিনি। তাঁর দৈহিক উচ্চতা ৩৪ ইঞ্চি, অর্থাৎ ২ ফুট ১০ ইঞ্চি। ২৬ বছর বয়সি পাত্রের নাম মুন্না ভারতী। তিনি ভাগলপুরের মাসারুর বাসিন্দা বিন্দেশ্বরী মন্ডলের পুত্র। তাঁর দৈহিক উচ্চতা ৩৬ ইঞ্চি, অর্থাৎ ৩ ফুট। গত সোমবার তাদের বিয়ের ভির দেখে মনে হয়েছে সাক্ষাৎ কোনও সেলিব্রিটি যুগলের বিয়ের আসর। মমতা আর মুন্নার বিয়ের ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে অনেকে মন্তব্য করেছেন, 'ম্যাচ মেইড ইন হেভেন'। এক কথায়, স্বর্গীয় জুটি। বিয়ের আসরে এসেছিল 'ডিজে'। পাড়া প্রতিবেশীরাই সেই জলসার আয়োজন করেছিলেন। বিয়ের থিম সং ছিল, 'রব নে বানা দি জোড়ি।' গানের তালে শরীর দোলান নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলে। দেখার মতো অবস্থা হয় বিয়ের সময়। কোনও ভিয়াইপিকে সামনে পেশাদার চিত্রগ্রাহীদের মধ্যে ছবি তোলা নিয়ে যেমন হুড়োহুড়ি পরে যায়, অবিকল সেভাবেই প্রবল উৎসাহে শতাধিক মোবাইলের ফ্ল্যাশ মুহুর্মুহু জলসে ওঠে। পাত্রের বাবা বিন্দেশ্বরী জানান, এমন ছেলের আদৌ বিয়ে হবে কিনা, তা নিয়ে বিস্তর চিন্তায় ছিলেন তিনি। একদিন মুন্না নিজেই বাবাকে জানান, তিনি একটি মেয়েকে ভালবাসেন। তাকেই বিয়ে করতে চান। ছেলের ওমন কথা শুনে বাবা আরও ঘাবড়ে যান। সেই মেয়েকে ঘরে নিয়ে আসতে বলেন বাবা।
