তৃতীয় সন্তানের জন্ম দিলেই মিলবে ১১ লাখ, চিনা টোপ

তৃতীয় সন্তানের জন্ম দিলেই মিলবে ১১ লাখ, চিনা টোপ

দৈনিক সংবাদ অনলাইনঃ  বিশ্বে এখন সবথেকে জনবহুল দেশ চিন । জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৯৮০ সালে তৎকালীন চিনা সরকার নতুন নিয়ম আনে , যেখানে বলা হয় । প্রত্যেক দম্পতি একটি করে সন্তান নিতে পারবেন , কিন্তু সেই নিয়ম বাতিল হয় ২০১৬ সালে । ২০২১ সালের মে মাসে আবার এই বিষয়ে নতুন ‘ পলিসি ’ আনেন জিনপিংয়ের প্রশাসন । যেখানে বলা হয় একজন দম্পতি তিনটি করে সন্তান নিতে পারবেন । পাশাপাশি সন্তান নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয় চিনা নাগরিকদের । চিনা নাগরিকদের অতিরিক্ত সন্তানধারণে উৎসাহিত করার জন্য সম্প্রতি সমস্ত চিনা কোম্পানিগুলি তৃতীয় সন্তানের জন্ম দেওয়া কর্মীদের জন্য লোভনীয় সুযোগের কথা ঘোষণা করেছে । সেখানে বলা হয়েছে , যে মহিলা তৃতীয়বার সন্তানের জন্ম দেবেন তিনি পেয়ে যাবেন নগদ প্রায় সাড়ে এগারো লক্ষ টাকা । পাশাপাশি পুরো এক বছরের ছুটি । চিনা সংস্থা বেইজিং ডাবেইনং টেকনোলজি গ্রুপ তাদের কর্মীদের তৃতীয় সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য ৯০ হাজার ইউয়ান নগদ বোনাসের কথা সরকারি ভাবে ঘোষণা করার পরেই জিনপিং সরকার তৃতীয় সন্তান আইনকে কার্যত স্বীকৃতি দিল । পাশাপাশি সরকারি ভাবে মহিলা কর্মচারীদের তৃতীয় দফায় এক বছর মাতৃকালীন ছুটি এবং পুরুষ কর্মীদের নয় মাস সবেতন ছুটির কথাও ঘোষণা করা হয়েছে । সরকারি ভাবে তৃতীয় সন্তানের বিষয়টির স্বীকৃতি মেলায় চিনের সমস্ত বেসরকারি সংস্থাগুলি এবার বিজ্ঞাপন দিয়ে সাড়ে এগারো লক্ষ টাকা সুবিধার কথা ঘোষণা করল । তবে কেবল যে তৃতীয়বার মাতৃকালীন ক্ষেত্রেই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে এমন নয় । যেসব কর্মচারীরা তাদের দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেবেন তাদের ৬০ হাজার ইউয়ান বোনাস দেওয়া হবে যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাত লক্ষ টাকার কাছাকাছি । কেউ যদি তাদের প্রথম সন্তানের জন্ম দেন তাহলে তারা ৩০ হাজার ইউয়ান বোনাস পাবেন যা সাড়ে তিন লক্ষ টাকার বেশি । আসলে বহুদিন ধরে চিনে এক সন্তান নীতির কারণে লিঙ্গ অনুপাতের মধ্যে বিস্তর ফারাক ঘটেছে । একটা সময় এই নীতির কারণে প্রচুর সংখ্যক মহিলার গর্ভপাত করানো হয়েছিল । তাই জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন চিনা সরকারের তরফে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় । ২০১৯ সালে চিনে জন্ম নিয়েছিল  প্রায় ১৪ কোটি ৬৫ লক্ষ শিশু । তার ঠিক এক বছর পর অর্থাৎ ২০২০ সালে জন্ম নেয় প্রায় ১২ কোটি শিশু । জন্ম হারে এতটা পতনের কারণে ২০২১ সালের মে মাসে চিনা সরকার বাধ্য হয় তিন সন্তান নীতি প্রবর্তন করতে ।চিনের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ঝিওয়েই ঝাং বলেছেন , ‘ শুরুতে এর কিছু ইতিবাচক প্রভাব হতে পারে , কিন্তু সেটা দীর্ঘমেয়াদী হবে না । ' তার মতে , সন্তান মানুষ করার খরচ , বিশেষ করে শিক্ষা এবং আবাসনের খরচ যদি সরকার সফলভাবে কমাতে পারে , তাহলে সরকারের তৃতীয় সন্তান নীতিতে দীর্ঘমেয়াদী ফল পাওয়া যেতে পারে । তবে সরকারি ঘোষণার পরেও সমাজমাধ্যমে নতুন এই পদক্ষেপ নিয়ে চিনাদের মধ্যে তেমন কোনও উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়নি ।

সম্পরকিত খবর